1. news@sangbadeisomoy.com : সংবাদ এই সময় : সংবাদ এই সময়
  2. info@www.sangbadeisomoy.com : সংবাদ এই সময় :
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গণতন্ত্র, সুশাসন ও জবাবদিহিতা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: মাসুদ সাঈদী সামাজিক সম্পর্ক সুস্থতা বাড়ায়, অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি হতাশ : সালাহউদ্দিন আহমদ ঘুরে আসতে পারেন সবুজ পাহাড়ের কোলে নীল পানিরাশির কাপ্তাই লেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যানের দেশে ফিরতে চান শেখ হাসিনা, তবে দিয়েছেন শর্ত আজও ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে এক পরিবর্তন ঐক্যের মূল ভিত্তি ঈমান ভিয়েতনামে ২৪ ঘণ্টায় ১,০৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড

হা হা হা এটাই বাস্তব…ভাইরাল কাঠমিস্ত্রি রিপন মিয়ার জীবনের গল্প

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

নুরুল আলম।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া
কৈশোরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন; কিন্তু সে সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। প্রেমিকা তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এ ব্যর্থতায় ভেঙে না পড়ে বানানো শুরু করেন ভিডিও। এ ভিডিও তাঁকে এনে দেয় জনপ্রিয়তা। বলছি নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাঠমিস্ত্রি রিপন মিয়ার কথা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে তিনি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর।

‘বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিয়ো ডাক, তোমার সাথে গল্প করব আমি সারা রাত’—২০১৬ সালের একটি ভিডিও বদলে দেয় সবকিছু। সময়ের সঙ্গে তাঁর বানানো মজার মজার ভিডিও ফেসবুকে তাঁর পরিচিতি এনে দিতে থাকে। শুরুর দিনগুলো নিয়ে রিপন বলেন, ‘ছ্যাঁকা খেয়ে অনেকেই তো অনেক কিছু করে, অনেকে মরে যায়, নেশাপানি করে। আমি চিন্তা করলাম ভিডিও বানাই। যে চলে গেছে, চলে যাক। এই অনুপ্রেরণা নিয়েই শুরু। কষ্টের সময়টা ভুলতেই অনলাইনে আসা।’

রিপন মিয়াছবি: টিমের সৌজন্যে
ছ্যাঁকা খেয়ে অনেকেই তো অনেক কিছু করে, অনেকে মরে যায়, নেশাপানি করে। আমি চিন্তা করলাম ভিডিও বানাই। যে চলে গেছে, চলে যাক। এই অনুপ্রেরণা নিয়েই শুরু। কষ্টের সময়টা ভুলতেই অনলাইনে আসা।
রিপন মিয়া

সবার জন্য রিপন মিয়া
‘হা হা হা এটাই বাস্তব, আই লাভ ইউ’ শুনলেই প্রথমে মাথায় আসে রিপনের কথা। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে। অন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অনুসারীরা বয়স কিংবা পেশাভেদে সীমাবদ্ধ হলেও রিপনের ভিডিও উপভোগ করেন সব বয়স আর শ্রেণির মানুষ। অনেক ক্রিয়েটরের কমেন্ট বক্স যেখানে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় ঠাসা, সেখানে শুভেচ্ছা আর ইতিবাচক বার্তায় ভরপুর রিপনের কমেন্ট সেকশন। এই গ্রহণযোগ্যতার রহস্যও খুঁজে পাওয়া গেছে—রিপনের নির্ভেজাল সারল্য। সেই সারল্যই তাঁর কনটেন্টকে আলাদা করে দিয়েছে সবার কাছে।

রিপনের ভিডিও ও পোস্টে উঠে আসে তাঁর দৈনন্দিন দিনলিপি। খুব ভোরে শুরু হয় তাঁর দিন। ছাই দিয়ে দাঁত মেজে পুকুরে গোসল সারেন। এরপর কাঠমিস্ত্রির কাজে চলে যান। কাজ শেষে তাঁকে কখনো পাওয়া যায় খাল-বিলে মাছ ধরতে, আবার কখনো কোনো আম-জামগাছের মগডালে। সবখানেই তাঁর মুখভরা হাসি।
দিনযাপনের গল্প
রিপনের ভিডিও ও পোস্টে উঠে আসে তাঁর দৈনন্দিন দিনলিপি। খুব ভোরে শুরু হয় তাঁর দিন। ছাই দিয়ে দাঁত মেজে পুকুরে গোসল সারেন। এরপর কাঠমিস্ত্রির কাজে চলে যান। কাজ শেষে তাঁকে কখনো পাওয়া যায় খাল-বিলে মাছ ধরতে, আবার কখনো কোনো আম-জামগাছের মগডালে। সবখানেই তাঁর মুখভরা হাসি। রিপনের ভাষায়, ‘সবকিছুই ওয়াও লাগে।’
শুরুতে অনুসারী আর ভিউ কম থাকলেও সেসব নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। নিজের ভিডিও নিজে দেখেই আনন্দ পেতেন। রিপন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিও করতে ভালা লাগত, ভিডিও করতাম। কে দেখল না দেখল, এইতা নিয়া ভাবতাম না।’ একটা সময় পর পরিচিতি বাড়তে থাকে। সবার উৎসাহে পরিশ্রম বাড়িয়ে দেন তখন। রিপন বলেন, ‘সবার সাপোর্ট পেয়ে বেশি বেশি ভিডিও বানানো শুরু করি। মানুষের থেকে অনেক ভালোবাসা পাইছি। তবে জনগণ আমাকে কেন ভালোবাসে, জানি না (হাসি)।’

হা হা হা এটাই বাস্তব, আই লাভ ইউ’ শুনলেই প্রথমে মাথায় আসে রিপনের কথা। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে। অন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অনুসারীরা বয়স কিংবা পেশাভেদে সীমাবদ্ধ হলেও রিপনের ভিডিও উপভোগ করেন সব বয়স আর শ্রেণির মানুষ।

জীবনের মূলমন্ত্র সারল্য
অনুসারীরা মনে করেন, সারল্যই রিপনের সাফল্যের রহস্য। রিপন মনে করেন, গ্রামের আলো-বাতাসই তাঁকে সরল করে রেখেছে, শহরের জটিল জীবন তিনি চান না। রিপন বলেন, ‘শহরে গেলে থাকতে পারি না। দম বন্ধ লাগে। গ্রামে যে মায়া–মহব্বত, এটা শহরে নেই। শব্দ ও গাড়ি ভালো লাগে না। গ্রামের মানুষগুলোর জন্যই আমি আগের মতো আছি। এমনই থাকতে চাই সব সময়।’ সফলতার শতভাগ কৃতিত্ব সৃষ্টিকর্তাকেই দিয়েছেন রিপন, ‘সব আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি যারে দেন, ছাপ্পর মাইরা দেন।’
নিজের ভিডিওর বাইরে অন্য কারও কনটেন্ট দেখেন না রিপন। তিনি বলেন, ‘অনলাইনে তো এখন ঢোকা যায় না। চারদিকে খারাপ কনটেন্ট। আমি আমার নিজের ভিডিওই দেহি। নিজের দুষ্টুমি নিজের কাছেই ভালা লাগে। নিজেই দেহি আর হাসি। তবে অনেকের ভিডিও দেখে খারাপ লাগে। টাকা কামানোর কত পথ আছে! মানুষ কিন্তু চিরস্থায়ী না, এখন যা করছে, মৃত্যুর পর কিন্তু সব থাকবে। মানুষ থাকে না, কর্ম থেকে যায়।’

শহরে গেলে থাকতে পারি না। দম বন্ধ লাগে। গ্রামে যে মায়া–মহব্বত, এটা শহরে নেই। শব্দ ও গাড়ি ভালো লাগে না। গ্রামের মানুষগুলোর জন্যই আমি আগের মতো আছি। এমনই থাকতে চাই সব সময়।

জনপ্রিয়তার সঙ্গে আর্থিক সচ্ছলতা এলেও কাঠমিস্ত্রির কাজ ছাড়েননি রিপন। এ কাজের মধ্যেই শান্তি খুঁজে পান। জানান, ফেসবুক-ইউটিউব কাল না–ও থাকতে পারে। নিজের অস্তিত্বকে ভুলে গেলে হবে না। রিপন বলেন, ‘অনলাইন আজ আছে, কাল নেই। আমি আমার কাজ নিয়ে ভালো আছি। মানুষের প্রয়োজনে পাশে থাকতে পারছি। কারও ভাঙা ঘর ঠিক করে দিই, নতুন ঘর বাইন্দা দিই। এটা আমাকে অনেক শান্তি দেয়।’
নিজেকে সুখী মানুষ মনে করেন রিপন মিয়া। বলেন, ‘পকেটে ২০০ টেহা, নিজের প্রতি বিশ্বাস আর বুকভরা নিশ্বাস—আমি রিপন যেখানে মন চায় চলে যাই। আমি সুখী মানুষ। বাপ-মা ও তিন ভাই মিলে একলগে তাহি। একসাথে খায়াদায়া তাহি। জীবনে আর কী লাগে!’
অনলাইনে তো এখন ঢোকা যায় না। চারদিকে খারাপ কনটেন্ট। আমি আমার নিজের ভিডিওই দেহি। নিজের দুষ্টুমি নিজের কাছেই ভালা লাগে। নিজেই দেহি আর হাসি। তবে অনেকের ভিডিও দেখে খারাপ লাগে। টাকা কামানোর কত পথ আছে! মানুষ কিন্তু চিরস্থায়ী না, এখন যা করছে, মৃত্যুর পর কিন্তু সব থাকবে। মানুষ থাকে না, কর্ম থেকে যায়।

রিপনের ভিডিও নির্মাণ থেকে সম্পাদনার জন্য রয়েছে একটি দল। তাঁর হয়ে সবকিছুর ব্যবস্থাপনা তারাই করে। নিজের পরিচিতির পেছনে এ দলের যথেষ্ট অবদান আছে, মনে করেন রিপন। তিনি বলেন, ‘সজীব ভাই, নাঈম ভাইসহ বাকিরা মিলে সবকিছু সামলান। আমি ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়ালেহা করছি, আমি এইতা বুঝি না। তাঁরাই আমার সবকিছু দেখাশোনা করেন। তাঁদের জন্যই আমি এ জায়গায়।’ রিপনের ব্যবস্থাপনা দলের সজীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিপন মিয়াকে সবাই যেভাবে দেখেন, উনি আসলে তেমনই। ওনাকে আমরা ওনার মতো ছেড়ে দিই। তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ, সরলতার সঙ্গে সততা। এত এত জনপ্রিয়তার পরও নিজের পেশার প্রতি তাঁর যে ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা, আমাদের সব সময় অবাক করে।’

জনপ্রিয়তার সঙ্গে আর্থিক সচ্ছলতা এলেও কাঠমিস্ত্রির কাজ ছাড়েননি রিপন। এ কাজের মধ্যেই শান্তি খুঁজে পান। জানান, ফেসবুক-ইউটিউব কাল না–ও থাকতে পারে। নিজের অস্তিত্বকে ভুলে গেলে হবে না।

অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, অনলাইন থেকে রিপনের আয়ের টাকা কোথায় যায়? রিপন কি তাহলে তা সঞ্চয় করেন? প্রশ্নটি করা হয় সজীবের কাছে। তিনি জানান, রিপনের আয়ের টাকায় কয়েকটি ব্যবসা চলছে। সামনে আরও কিছু নতুন ব্যবসা শুরু হবে। সজীব বলেন, ‘রিপনের দোকান নামে একটি অনলাইন শপ চলছে। যাতে আখের চিনি, ঘি থেকে আরও পণ্য পাওয়া যায়। পাশাপাশি কাপড়ের একটি ব্র্যান্ড শুরু করতে যাচ্ছেন রিপন ভাই। সব ঠিক থাকলে খুব শিগগির এটি যাত্রা শুরু করবে।’

আয়ের অর্থ দিয়ে মানবিক সহায়তাও করেন রিপন। তবে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে চায় না তাঁর টিম। সজীব বলেন, ‘রিপন ভাই এ কাজগুলো খুব গোপনে করেন। বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেন না। রিপন ভাইয়ের গ্রামে একটি লাইব্রেরি করা হচ্ছে, সেখানে একজন শিক্ষকও রাখা হবে, যিনি বিনা মূল্যে পাঠদান করবেন। ভাই পড়াশোনা করতে পারেননি, তাই তিনি চান, দারিদ্র্যের কাছে হেরে গিয়ে কেউ যেন পড়াশোনা থেকে ঝরে না পড়ে।’

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট