1. news@sangbadeisomoy.com : সংবাদ এই সময় : সংবাদ এই সময়
  2. info@www.sangbadeisomoy.com : সংবাদ এইসময় :
অতিথি সমাদরে ইসলামের মনোমুগ্ধকর নীতি - সংবাদ এইসময়
মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

অতিথি সমাদরে ইসলামের মনোমুগ্ধকর নীতি

  • প্রকাশিত: সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

মুফতি সাইফুল ইসলাম

ইসলামী জীবনব্যবস্থায় মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য, সহানুভূতি ও সম্মানের শিক্ষা সর্বোচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। সমাজজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের শিষ্টাচার মানুষের হৃদয়ে সৌন্দর্য ও স্নেহের বন্ধন সৃষ্টি করে। অতিথি বা মেহমানের সম্মান প্রদর্শন সেই শিষ্টাচারেরই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।

” (বুখারি, হাদিস ৬০১৮; মুসলিম, হাদিস: ৪৭)। এই সংক্ষিপ্ত বাণী ইসলামী আদর্শের গভীর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। এতে বিশ্বাস ও আচরণের এমন এক সুন্দর সমন্বয় ফুটে ওঠে, যেখানে ঈমান কেবল অন্তরের বিষয় নয়; বরং তা আচরণের সৌন্দর্যেও প্রতিফলিত হয়।
অতিথি সম্মান করা মানে কেবল খাওয়ানো বা থাকার জায়গা দেওয়া নয়; বরং তাকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানানো, সম্মানজনক ব্যবহার করা এবং তার আরাম-স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করা।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নবী ইব্রাহিম (আ.)-এর অতিথি আপ্যায়নের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন- ‘তুমি কি ইব্রাহিমের সম্মানিত অতিথিদের খবর পেয়েছ?” (সুরা আয-যারিয়া, আয়াত :২৪)।
এই আয়াতে ‘সম্মানিত অতিথি’ শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে—অতিথি নিজে যেমন সম্মানের দাবিদার, তেমনি তার সঙ্গে ব্যবহারও হতে হবে সম্মানজনক।

রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও অতিথি আপ্যায়নের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ রেখে গেছেন। তিনি কখনো অতিথিকে নিজের আহারের আগে খাওয়াতেন, কখনো নিজের চাদর বিছিয়ে দিতেন।

সাহাবায়ে কেরামও তাঁর এই গুণে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের অল্প খাবার ভাগ করে নিতেন। এমনকি সাহাবিগণ নিজের সন্তানের খাবার বন্ধ করে অতিথিকে তা পরিবেশন করতেন।
ইসলামের দৃষ্টিতে অতিথি আপ্যায়ন কেবল সামাজিক সৌজন্য নয়, এটি ঈমানের অংশ। অতিথিকে অসম্মান করা মানে ঈমানের সৌন্দর্য ক্ষুণ্ন করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অতিথি তিন দিন সম্মান পাওয়ার অধিকারী; একদিন পূর্ণ আপ্যায়ন, পরবর্তী দুই দিন কিছুটা হালকা।

এরপর অতিরিক্ত কিছু করলে তা সদকা।’ (বুখারি, হাদিস ৬০১৯)। এতে বোঝা যায়, ইসলাম একদিকে অতিথি-সেবা উৎসাহিত করেছে, অন্যদিকে বাস্তবতার ভারসাম্যও রেখেছে।
আজকের যান্ত্রিক যুগে মানুষের সম্পর্ক যেখানে শীতল ও স্বার্থনির্ভর হয়ে পড়ছে, সেখানে ইসলামের এই অতিথি সম্মানের শিক্ষা সমাজে উষ্ণতা ও ভালোবাসা ফিরিয়ে আনতে পারে। অতিথি আপ্যায়ন মানুষকে বিনয়, ত্যাগ ও সহানুভূতির অনুশীলন করায়—যা ইসলামী চরিত্র গঠনের অপরিহার্য অংশ।

অতএব, অতিথি আপ্যায়ন কেবল একটি আচার নয়, বরং এটি ঈমানের প্রতিফলন। যে হৃদয়ে আল্লাহ ও আখিরাতের ভয় আছে, সে জানে—প্রত্যেক অতিথি আসলে এক বরকত, এক পরীক্ষা এবং এক সুযোগ; যার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর নীতি সমাজকে করে তোলে ভালোবাসা, আতিথেয়তা ও মানবতার আলোকিত আবাস।

লেখক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক

saifpas35@@gmail.com

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট